Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২nd ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঈশ্বরদীস্থ মা-মনি কৃষি খামার পরিদর্শন করলেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক


প্রকাশন তারিখ : 2017-01-29

কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান গত ২৮ জানুয়ারি পাবনায় এক সরকারি সফরে এসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চাষী ঈশ্বরদী উপজেলার আলহাজ্ব শাহজাহান আলী পেঁপে বাদশার মা-মনি কৃষি খামার পরিদর্শন করেন। কঠোর পরিশ্রম আর সাধনার বিনিময়ে বাদশা সৃষ্টি করেছেন এই কৃষি খামার। তার সফলতায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটেছে ঈশ্বরদীর সলিমপুর গ্রামে। কৃষির এই অসাধারণ সফলতায় জাতীয়ভাবে তিনি সনাক্ত হয়েছেন বাদশা হতে পেঁপে বাদশায়। তিনবার জাতীয় পুরস্কার সহ কৃষিতে অনেক বার বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। চেষ্ঠা, সাধনা, অধ্যবসায় আর একাগ্রতার মাধ্যমে ভাগ্য বদলের এক সফল উপাখ্যানের নায়ক তিনি। তার সুপরিকল্পিত এবং সুবিন্যস্ত ভাবে  যত্নের সাথে গড়ে তোলা মা-মনি কৃষি খামারে তিন বিঘার ওপরে আছে ড্রাগন ফল, ৮০ বিঘা পেয়ারা বাগান, ৩২ বিঘার শরিফা বাগান, ৪৬ বিঘা লিচুর বাগান, ১৫ বিঘায় আম বাগান, ৩০ বিঘায় পেঁপে বাগান, ২ বিঘায় কদবেল, বাগানে ৩৫০টি বেল গাছ, ৩০০টি জামরুল গাছ, ১০০টি কূল গাছ, ভিয়েত নামী খাটো জাতের নারিকেলের চারা লাগানো হয়েছে ২৫০টি, জাম্বুরা আছে ১০০টি, লেবু ৫০টি সহ অন্যান্য জাতের ফলগাছ ঘুরে ঘুরে দেখেন পরিচালক আর প্রত্যেকটা বাগান দেখেই তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। এছাড়া বাগানে আরো আছে সবজীর মধ্যে লেটুশ পাতা, ব্রোকোলী, রেড ক্যাবেজ, চাইনিজ ক্যাবেজ, বিট, ধনিয়ার পাতা, আলু বেগুন, গাজর, চাইনিজ ওল। বাগানের রোগ বালাই, পোকা-মাকড় দমন, সার প্রয়োগ, পানি সেচ সহ পরিচর্যার বিষয়ে পরিচালকের এক প্রশ্নে খামারের দায়িত্বে থাকা পেঁপে বাদশার ছোট ভাই অহিবুল জানান, বাগানে প্রতিদিন ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করে। তাদের কখন কোথায় কিভাবে খাটানো হয় তা আমি এবং একজন ডিপ্লোমা কৃষিবিদ নির্ধারণ করি। এছাড়া বাগানের গাছের এবং অন্যান্য ফসলের রোগ বালাই পোকা মাকড় দমনের জন্য সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, প্রয়োজনে নিকটস্থ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের পরামর্শ নিয়ে থাকি।
বাগানের উৎপাদিত ফলমূল সবজী বাজারজাত করণের প্রশ্নে অহিবুল জানান, ঢাকা শ্যামবাজারে আমাদের নিজস্ব আড়তে এসব ফলমূল সবজী পাঠানো হয় এবং সেখান হতে বিক্রি হয়। অহিবুল আরো জানান, মা-মনি কৃষি খামারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ফলের চারা/কাটিং উৎপাদন করে সুলভ মূল্যে চাষীদের কাছে খুচরা অথবা পাইকারী দামে বিক্রি করা হয়। শুধু তাই নয়, যারা বাগান করতে আগ্রহী তাদেরকে বাগান করার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ, কলাকৌশলসহ যাবতীয় পরিকল্পনা এবং অত্যন্ত সুলভ মূল্যে চারা সরবরাহ করা হয় যাতে তারা আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারে। এরকম বাগান কয়টি গড়ে উঠেছে জানতে চাইলে অহিবুল জানান, শুধু আশে পাশেই নয় জেলার অন্যান্য উপজেলা হতেও বাগান করার জন্য এখানে এসে পরামর্শ নেয়, চারা কিনে নিয়ে যায়। প্রয়োজনে দক্ষলোক পাঠিয়ে তাদের বাগান তৈরির যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে অহিবুল জানান, কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কলেজ, ইউনিভার্সিটি হতে প্রতিনিয়ত বাগান দর্শনে আসে। তাদেরকে বাগান তৈরির পরিকল্পনা, নকশা, চারা/কাটিং উৎপাদন, পরিচর্যা, গাছের রোগ বালাই দমন সহ এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। মা-মনি খামারের মালিক আলহাজ্ব শাহাজাহান আলী বাদশা বর্তমানে বাংলাদেশ ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ইক্ষু মিলজোন সম্পর্কিত ইক্ষু চাষী কল্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক। এছাড়া তিনি  জাতীয় পর্যায়ের কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন কমিটির সাথে সম্পৃক্ত। এ সময় খামারে আশে পাশের এলাকা হতে বিভিন্ন চাষীরা জমায়েত হয়। পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান নিরাপদ পদ্ধতিতে ফল-সবজী উৎপাদনের কলাকৌশল, ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি, সবজী উৎপাদনে ফেরোমন ট্র্যাপ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করেন।
এর আগে পরিচালক, পাবনার কৃষি তথ্য সার্ভিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অফিসে এক মত বিনিময় সভায় মিলিত হন। তিনি কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি বিস্তারের ক্ষেত্রে কৃষির যাবতীয় কলাকৌশল, লাভজনক দিক মিডিয়া সহ কৃষি সম্প্রসারণের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে চাষীদের কাছে পৌঁছানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দেশ ও জাতির স্বার্থে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চমূল্যের ফল-সবজী আবাদের কলাকৌশল, ধ্যান-ধারণা এবং কৃষি তথ্য সার্ভিসের সকল সেবাদি কৃষকের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশ প্রদান করেন।